১৫ দেশে ছড়াল মাঙ্কিপক্স

নতুন করে আরও একটি দেশে ছড়িয়েছে মাঙ্কিপক্স। এবার অস্ট্রিয়ায় শনাক্ত হয়েছে এই রোগে আক্রান্ত রোগী। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৫টি দেশে ছড়িয়েছে মাঙ্কিপক্স।

এর আগে রোববার ইসরায়েল ও সুইজারল্যান্ডে একজন করে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিল বিবিসি। আক্রান্ত ওই দুজন সম্প্রতি বিদেশ সফর করেছিলেন। এ ছাড়া আরও কয়েকজন সন্দেহভাজন রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে ইসরায়েল।

এখন পর্যন্ত ইউরোপে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী বেশি পাওয়া গেছে। ইউরোপের যুক্তরাজ্য, স্পেন, জার্মানি, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেনে এ রোগে আক্রান্ত রোগী পাওয়া শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় এ রোগে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।

এখন পর্যন্ত বিশ্বে ৮০ জনের বেশি মাঙ্কিপক্সের রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিকে, মাঙ্কিপক্স আরও ছড়াতে পারে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব এমন সব দেশে ঘটছে যেখানে এ ভাইরাসটির স্বাভাবিক আবাসস্থল নয়। আর মাঙ্কিপক্সে যারা সংক্রমিত হচ্ছেন তাদের অনেকেই সমকামী বা উভকামী যুবক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মাঙ্কিপক্স রোগ মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। যাদের লক্ষণ আছে এমন ব্যক্তির সঙ্গে সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে এটি হচ্ছে।

ডব্লিউএইচওর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডেভিড হেম্যান জানিয়েছেন, এটি যৌন সংক্রমণের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। এটা যৌনবাহিত রোগের মতোই সংক্রমিত হচ্ছে, যা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী।

যৌন ক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে মাঙ্কিপক্স ছড়াচ্ছে। আর আক্রান্তদের বেশিরভাগেরই যৌনাঙ্গ এবং তার আশপাশের জায়গায় গুটি হতে দেখা যাচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন সমকামী-উভকামী পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তা স্পষ্ট নয়। এটা কি শুধুই ঘটনাচক্রে এমন হচ্ছে, নাকি যৌন আচরণের ফলে ভাইরাসটি সহজে ছড়াতে পারছে- তাও স্পষ্ট নয়।

মাঙ্কিপক্স সংক্রমিত কারো ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এলে সেটা অন্যের দেহে ছড়াতে পারে। ফাটা বা কাটা চামড়া, চোখ, নাক বা মুখ দিয়ে মানুষের দেহে ঢুকতে পারে মাঙ্কিপক্স।

এর আগে এ রোগ মূলত আফ্রিকার বেনিন, ক্যামেরুন, কঙ্গো, গ্যাবন, ঘানা, লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সিয়েরা লিয়নের মতো দেশগুলোয় শনাক্ত হতো। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় এত দিন এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। এ রোগের ক্ষেত্রে আফ্রিকার পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের দেশগুলো ‘এনডেমিক’ বা সংক্রমণপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন মানুষ থেকে মানুষের শরীরে এ সংক্রমণ খুব সহজে ছড়িয়ে পড়ে না। সাধারণত রোগী নিজে থেকেই এ রোগ থেকে সেরে ওঠে। এখন পর্যন্ত কারও মাঙ্কিপক্সে মৃত্যু হয়নি। এখনও মাঙ্কিপক্সের জন্য নির্দিষ্ট কোনো টিকার কথা বলেননি বিশেষজ্ঞেরা। তবে গুটিবসন্ত বা স্মলপক্সের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের মিল থাকায়, যাদের গুটিবসন্তের টিকা নেয়া আছে, তাদের ক্ষেত্রে এ রোগ মারাত্মক আকার নেবে না বলে ধারণা অনেকের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *