হ্যামিল্টনে বাংলাদেশকে জিততে হলে ডিঙাতে হবে নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড়

স্পোর্টস ডেস্কঃ  সেডন পার্কে স্পিনারদের জন্য যে ভালো কিছু আছে তা বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ বোলিং করার সময়ই বোঝা যাচ্ছিল। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদিও তাই তাঁর লেগ স্পিনার ইশ সোধিকে ষষ্ঠ ওভারেই আক্রমণে নিয়ে আসেন। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান খুব ভালোভাবেই দিয়েছেন সোধি। তাঁর বোলিংয়ে জোড়ায় জোড়ায় আউট হয়ে ফিরেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সোধির প্রথম ওভারে ফিরেছেন সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুন। দ্বিতীয় ওভারে মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান।

হ্যামিল্টনে বাংলাদেশকে জিততে হলে ডিঙাতে হবে নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড়। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২১০ রান করেছে স্বাগতিকেরা। ২১১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মোহাম্মদ নাঈমের ব্যাটে শুরুটা ছিল ইতিবাচক। প্রথম ওভারেই ৯ রান তুলে নেন বাংলাদেশের ওপেনার। কিন্তু তৃতীয় ওভারে এসে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৫ বলে মাত্র ৪ রান করে ফিরে গেছেন লিটন দাস। এরপর একে একে ফিরেছেন মোহাম্মদ নাঈম, সৌম্য, মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান। এই প্রতিবেদন লেখার সময় বাংলাদেশের রান ছিল ১১ ওভারে ৬ উইকেটে ৮১।

এর আগে শুরুতেই উইকেট হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। মার্টিন গাপটিলও ফিরেছিলেন দ্রুতই। কিন্তু একটি বড় জুটিই হ্যামিল্টনের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে তাদের নিয়ে গেছে রান পাহাড়ে। প্রথম ওভারের শেষ বলেই নিউজিল্যান্ডের আলোচিত অভিষিক্ত ফিন অ্যালেন মুখোমুখি হলেন অ্যান্টি ক্লাইমেক্সের। ২১ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান সুযোগ পেয়েছেন আইপিএলে। যাকে কিউই ক্রিকেটের ব্যাটিংয়ের ভবিষ্যৎ ভাবা হচ্ছে, তাঁকে খেলতেই দিলেন না বাংলাদেশের পক্ষে অভিষিক্ত নাসুম আহমেদ। নিজের বাঁ হাতি স্পিনের কাবু করলেন অ্যালেনকে। নিউজিল্যান্ড তখন স্কোরবোর্ডে তুলেছেন মাত্র ১ রান।

শুরুতেই উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলানোর জন্য অনেকেই ছিলেন নিউজিল্যান্ডের। ছিলেন মার্টিন গাপটিল। তিনি সামলালেনও। ২৭ বলে ৩৫ রানের দারুণ একটা ইনিংস খেলে বড় কিছুর স্বপ্নই দেখছিলেন। কিন্তু আবারও সেই নাসুম আহমেদ। তাঁর বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ তখন ৬.৫ ওভারে ৫৩ রান।

২ উইকেট তুলে নেওয়ার পর নিউজিল্যান্ডের ওপর চাপ তৈরি করার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সেটি হয়নি। ডেভন কনওয়ে আর উইল ইয়ং দাঁড়িয়ে পড়লেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে এ দুজন তুললেন ৬০ বলে ১০৫ রান। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন একটা জুটি হয়ে গেলে বোলিং করা দলের আর কী করার থাকে। বাংলাদেশেরও কিছু থাকল না। একেবারে হিসেব করে বাংলাদেশের বোলারদের হ্যামিল্টনের সিডন পার্কের এদিক–ওদিক নিয়ে ফেললেন কনওয়ে আর ইয়ং।

অভিষিক্ত বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শেখ মেহেদী হাসান কিংবা নাসুম—বাদ যাননি কেউই। তবে ঝড়টা গেছে মূলত শরিফুল, সাইফউদ্দিন আর মোস্তাফিজের ওপর দিয়েই। শরিফুলের ওভারপ্রতি রান খরচের হার ১২.৫০, সাইফউদ্দিনের ১০.৭৫, মোস্তাফিজের ১২.০০ আর মেহেদীর ৯.২৫। রান দেওয়ার এই হারই বলে দেয় কনওয়েদের সামনে কতটা অসহায় ছিলেন তাঁরা।

কনওয়ে ৫২ বলে ৯২ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। ১১টি চার আর ৩টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। আক্ষেপ হতে পার, সেঞ্চুরি করতে পারলেন না বলে। ইয়ং ৩০ বলে ৫৩ রান করেন। তিনি মেরেছেন ২টি চার ও চারটি ছক্কা। তাঁকে ফিরিয়েছেন মেহেদী হাসান, আফিফের ক্যাচে। শেষ দিকে গ্লেন ফিলিপস ১০ বলে ২৪ রান করে। ইয়ংকে আউট করেও শান্তি পায়নি বাংলাদেশ। ফিলিপস আর কনওয়ের চতুর্থ উইকেট জুটিটিতে ২০ বলে এসেছে ৫২ রান। ফিলিপস ৩টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কায় তাঁর ইনিংসটি সাজান।

সাকিব আল হাসান তো নেই–ই। ওয়ানডের পর দেশে ফিরে গেছেন তামিম ইকবাল। কাঁধের চোটে নেই মুশফিকুর রহিমও। আজ মাহমুদউল্লাহর বড় ভরসা সৌম্য সরকার, লিটন দাসরাই। তাঁরা কতদূর কী করতে পারবেন, সেটি অবশ্য সময়ই বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *