বাংলাদেশিরা ঢুকতে পারবেন না যুক্তরাজ্যে !

নিউজ ডেস্কঃ  করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ মোকাবিলায় বিশ্বের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ৪টি দেশকে লাল তালিকাভুক্ত করছে ব্রিটেন। এই তালিকায় আছে বাংলাদেশের নাম। তালিকায় থাকা অন্য দেশগুলো হলো- পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও কেনিয়া। শুক্রবার (২ এপ্রিল) ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ৯ এপ্রিল ভোর ৪টার পর লাল তালিকাভুক্ত দেশগুলো থেকে কেউ ব্রিটেনে প্রবেশ করতে পারবেন না।

মহামারির প্রকোপ বেশি এমন দেশগুলোর নাগরিকদের ব্রিটেন ভ্রমণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। দেশটির সরকার বলছে, টিকাদান কর্মসূচির একটি জটিল সময়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন থেকে দেশকে রক্ষায় ওই চার দেশকে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। অতিরিক্ত এসব বিধি-নিষেধ ইংল্যান্ডে করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলীয় ধরনের ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করবে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনে ব্রিটেনের অল্পকিছু মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এই ধরন ইউরোপের দেশগুলো থেকেই ব্রিটেনে ছড়িয়েছে। এছাড়া ব্রাজিলের ধরনটি বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে।

আগামী ৯ এপ্রিল ভোর চারটা থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী— যারা আগের ১০ দিন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ফিলিপাইন এবং কেনিয়া থেকে যাত্রা শুরু করবেন অথবা ট্রানজিট করবেন; তারা যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি পাবেন না।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, বাংলাদেশসহ লাল তালিকাভুক্ত চার দেশ থেকে বিমানের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করা হয়নি। এসব দেশ থেকে ব্রিটিশ, আইরিশ এবং যুক্তরাজ্যের বাসিন্দাদের বাণিজ্যিক রুট ব্যবহার করে ব্রিটেনে ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘শুধুমাত্র ব্রিটিশ এবং আইরিশ নাগরিক অথবা যুক্তরাজ্যে যাদের বসবাসের অধিকার রয়েছে (দীর্ঘমেয়াদী ভিসাধারীসহ); তারা ব্রিটেনে প্রবেশের অনুমতি পাবেন এবং তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে সরকার-অনুমোদিত কোয়ারেন্টাইন স্থাপনায় ১০ দিন কাটাতে হবে। এছাড়া তাদের একটি নির্ধারিত বন্দরে পৌঁছাতে হবে।’

ব্রিটেন এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৩৯টি দেশকে করোনাভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। সম্ভাব্য ভ্যাকসিনপ্রতিরোধী করোনাভাইরাসের নতুন ধরন যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দেশটির সরকার এই তালিকা তৈরি করে।

ইউরোপের দেশ ফ্রান্স এবং জার্মানিও এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে ব্রিটেনের আইনপ্রণেতাদের অনেকে তার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ চলছে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নতুন করে বেশ কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে দেশটির সরকার। আগামী সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আরেক দফা বিধি-নিষেধ জারি করতে পারেন বলে দেশটির গণমাধ্যমে আভাষ দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটেনে করোনাভাইরাস মহামারিতে এখন পর্যন্ত ৪৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যু ছাড়িয়েছে এক লাখ ২৬ হাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *