নিউজ ডেস্কঃ
ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অক্টোবর মাসের গোড়ায় ঢাকায় আয়োজিত হয়েছিল শিল্পী রোকেয়া সুলতানার একক প্রদর্শনী। দিল্লির ললিত কলা অ্যাকাডেমিতে বাংলাদেশি শিল্পী রোকেয়া সুলতানার প্রদর্শনী শুরু হওয়ার কথা ছিল ২৩ অক্টোবর। তার আগে ওই প্রদর্শনী স্থগিত করল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস।
বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির মাঝে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ৬৩ বছর বয়সী আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশি শিল্পী রোকেয়া সুলতানা ২৩ অক্টোবর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে একক শিল্প প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য প্রিন্ট ।
ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তির উপলক্ষে চলতি মাসের গোড়ায় ঢাকায় আয়োজিত হয়েছিল রোকেয়ার একক প্রদর্শনী। তারই পরের ধাপে রবিবার থেকে দিল্লির ললিত কলা অ্যাকাডেমিতে প্রদর্শনী শুরু হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশে বহু দুর্গাপুজো মণ্ডপে দুষ্কৃতী হামলা ঘটনার আবহে রোকেয়া সুলতানার প্রদর্শনী বন্ধের যোগ রয়েছে কিনা প্রশ্ন উঠছে। নাকি নেহাতই কাকতালীয়! আইসিসিআর-র অনুষ্ঠান পরিচালক অমিত সহায় মাথুর জানান, যাওয়া-আসার সমস্যা থাকায় স্থগিত করা হয়েছে। শীঘ্রই নতুন দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে। আর এক আয়োজক সংস্থা বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের পরিচালক লুভা চৌধুরী বলেন, ”আশা করি নতুন তারিখ দেওয়া হবে। আমরা ইতিবাচক।
বাংলাদেশী ফটোগ্রাফার আবির আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, “এটা শুনে মর্মাহত হয়েছি। কোনো দেশের শিল্পীদের তাদের কাজ দেখানো বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা অনুশীলনে বাধা দেওয়া উচিত নয়। কেন তাদের অন্যের অপকর্মের জন্য দায়ী করা হবে?
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য দ্য প্রিন্টকে বলেছেন,“রোকেয়া, যার ডাকনাম‘লাভলি’, একজন প্রতিভাবান শিল্পী। তবে কখনও কখনও, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈদেশিক সম্পর্কের পরিণতিগুলো একজন শিল্পীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে।
তিনি ব্যাখ্যা করেন যে বাংলাদেশের শিল্পীরা দীর্ঘদিন ধরে নিজ দেশের মধ্যে বিভিন্ন বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে। “আমি সংবাদপত্রের জন্য রাজনৈতিক কার্টুন আঁকতাম কিন্তু ২০১৭-এর পর যখন বাংলাদেশে ব্যাপক মিডিয়া আইন চালু হয় তখন আমি আঁকা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।”
গোটা ঘটনায় টুইটারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী লিখেছেন,”কোনও কারণ ছাড়াই বাংলাদেশি শিল্পী রোকেয়া সুলতানার একক প্রদর্শনী স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব কালচারাল রিলেশনসের সঙ্গে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল।
প্রদর্শনী যাতে যাতে দ্রুত শুরু করা যায় সে জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তার কথায়,”যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রদর্শনীর আয়োজন করার জন্য ভারত সরকারের কাছে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করছি। সাংস্কৃতিক বিনিময় দুই দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।
বিশ্বভারতীর কলাভবন থেকে এমএ ও এমফিল করেছেন রোকেয়া সুলতানা। তার শিক্ষাগুরু ছিলেন সোমনাথ হোড়, লালুপ্রসাদ সাউ ও সনৎ কর। দিল্লিতেই রয়েছেন রোকেয়া সুলতানা। তিনি হতাশ নন। তার মত, ‘আঁকা চালিয়ে যাব। আমি আশাবাদী।