নিউজ ডেস্কঃ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা আজ সোমবার শুরু হচ্ছে। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে এবারের উৎসবে রথ শোভাযাত্রাসহ অনেক আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করা হয়েছে।
সারাদেশের মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমিত পরিসরে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে রথটান ও অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান হবে। করোনার কারণে গত বছরও সীমিত পরিসরে রথযাত্রা উৎসব হয়েছিল।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, রথযাত্রা আয়োজন বিষয়ে সারাদেশের পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। কেবল মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অংশগ্রহণে ও ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী মন্দিরের ভেতরে রথটান এবং পূজাসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান হবে। মন্দিরের বাইরে কোনো ধরনের শোভাযাত্রা কিংবা ভক্ত সমাবেশ করা হবে না।
প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা শুরু হয়। ৯ দিন পর অনুষ্ঠিত হয় উল্টো রথযাত্রা। এবারের উল্টো রথযাত্রা হবে আগামী ২০ জুলাই। রথযাত্রার মতো উল্টো রথযাত্রাও উদযাপিত হবে সীমিত পরিসরে।
রথযাত্রা একেক অঞ্চলে একেক নামে পরিচিত। জগন্নাথদেবের রথযাত্রার প্রচলন পুরী জগন্নাথ দেবের মন্দির থেকে। বাংলাদেশেও রথযাত্রা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি পবিত্র উৎসব। ঢাকার উপকণ্ঠে ধামরাইয়ে এ রথযাত্রা যশোমাধবের রথযাত্রা নামে উপমহাদেশ বিখ্যাত। গাজীপুরের জয়দেবপুরে এই রথযাত্রা মাণিক্যমাধবের রথযাত্রা নামে পরিচিত। ভারতের ওডিশা রাজ্যের যশোমাধবের রথযাত্রা ও মহেশের জগন্নাথদেবের রথযাত্রাও উপমহাদেশ বিখ্যাত। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে রথযাত্রার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।
জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) ঢাকার সীমিত পরিসরের অনুষ্ঠানমালা আজ শুরু হচ্ছে। ইসকনের স্বামীবাগ আশ্রম মন্দিরের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে দুপুর ১২টায় মন্দিরের ভেতরেই রথটান অনুষ্ঠিত হবে। ২০ জুলাই উল্টো রথযাত্রাও একইভাবে আয়োজিত হবে।
ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী যশোমাধবের রথযাত্রাও সীমিত পরিসরে আয়োজিত হবে। এ ছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও সীমিত পরিসরে রথটান অনুষ্ঠিত হবে।
রথযাত্রা উপলক্ষে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন মণ্ডল, বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি পংকজ সাহা, রাহুল বড়ূয়া ও রবার্ট নিপন ঘোষ এবং সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস বল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।