আওয়ামী লীগ এমন উন্নয়ন করেছে যে দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এমন উন্নয়ন করেছে যে দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে ৪২ জন দরিদ্র। তাদের ক্রয়ক্ষমতা নেই। সেই মানুষদের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটে আওয়ামী লীগ সরকার কিছুই করেনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, যখন মানুষ চাল, ডাল, তেল, লবণ—এসব কিনতেই হিমশিম খাচ্ছে, তার মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। এর অর্থ হচ্ছে এই সরকারের দেশের মানুষের প্রতি কোনো ভালোবাসা নেই।
জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে কেটে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা সরকার বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, বাজেটে দেখবেন, সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রশাসন খাতে। পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা প্রশাসনের লোকজন। সরকার তাদের বেতন বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়াচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সবকিছু ব্যাখ্যা করলে দেখা যায়, সরকার চোর-ডাকাত-অর্থ পাচারকারীদের সাহায্য করেছে। যারা টাকা চুরি করল, ডাকাতি করল, লুণ্ঠন করে টাকা বিদেশে পাচার করে দিল, যারা পি কে হালদারের মতো, তারা ৭ শতাংশ ট্যাক্স দিলে টাকা ফেরত আনতে পারবে। কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না। ফলে তাদের দুদকও ধরবে না। হাইকোর্ট থেকেও তাদের কোনো প্রশ্ন করা যাবে না।
বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের নাকি লুটেরাদের, এমন প্রশ্ন করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, এ সরকার মানুষের পকেট কেটে এ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে।
ফখরুল বলেন, তারা জনগণের শত্রু। বাসভাড়া ও গ্যাসের দাম বেড়েছে। তারা আবার ঘোষণা দিয়েছে, সারের দামও বাড়বে। অর্থাৎ কৃষি খাতে সারের দাম তিন গুণ বাড়বে। শিল্প-কলকারখানায় যে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, তার দামও বাড়বে। প্রতিটি জিনিসের দাম এভাবে বাড়বে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা জিনিসটিকে হালকা করে দেখবেন না। এ দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এতটুকু বৃদ্ধি পায়নি।
উপহাস করে মির্জা ফখরুল বলেন, পদ্মা সেতু সোনা দিয়ে মুড়িয়ে তৈরি করেছে সরকার। এখন আমরা বিভিন্ন টোল দিয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে স্বর্গে যাব।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, মানুষের প্রতি যদি সরকারের কোনো ভালোবাসা থাকত, তাহলে সাধারণ মানুষের সাশ্রয় হতে পারে, এমন কাজ তারা করত।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলম ও বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক। বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ, দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ।